আমি লেখার পর মাসুদ রানার জনপ্রিয়তা বাড়ে : শেখ আবদুল হাকিম
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২০, ১১:৪১
কাজী আনোয়ার হোসেন জনক হলেও ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি বই লিখেছেন শেখ আবদুল হাকিম। কপিরাইট আইনে এই স্বীকৃতি পেয়ে স্বভাবতই দারুণ খুশি তিনি।
এক প্রতিক্রিয়ায় সেই আনন্দেরই প্রকাশ, ‘আমি দারুণ খুশি। আমার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
স্বীকৃতির পর এবার তার দাবি রয়ালটির। কপিরাইট আইন অনুযায়ীই নিজের প্রাপ্য বুঝে পেতে চান তিনি, ‘আমি আমার প্রাপ্য রয়ালটির টাকা চাই। আমার এক লড়াই শেষ হয়েছে, আরেক লড়াই শুরু হলো। সমঝোতা হলে ভালো। না হলে আইনি পথেই সমাধান হবে।’ রয়ালটির অঙ্কটা দুই সিরিজ মিলিয়ে চার কোটি টাকার মতো হবে বলে দাবি তার।
কাজী আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, তিনিই ধারণাটা দিতেন। সেই মতো লেখাটা তৈরি করতেন শেখ আবদুল হাকিমসহ অন্যরা। পেছনের গল্পটা কি আসলে সে রকমই? হাকিম স্মৃতি ঘেঁটে জানাচ্ছেন, “১৯৬৬-৬৭ সালের দিকে চিত্রশিল্পী হাশেম খান আমার বড় ভাই রহমানকে বই লেখার প্রস্তাব দিলে তিনি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। হাশেম খান ‘কুয়াশা’র একটি গল্প বলে দেন। আমি এক রাতে লিখে ফেলি। এটি কাজী আনোয়ার হোসেন সাহেব পছন্দ করেন। আমার ভাইয়ের মাধ্যমে আমাকে ১০০ টাকা দেওয়া হয়। এরপর আমাকে নিজেই কাহিনি তৈরি করে ‘কুয়াশা’ সিরিজের বই লিখে দিতে বলা হয়।”
এ তো গেল ‘কুয়াশা’র প্রসঙ্গ। মাসুদ রানার নেপথ্য কাহিনিও একই রকম? ইতিহাসটা বিস্তারিতভাবে বলতে গিয়ে হাকিম দাবি করছেন তিনি লেখা শুরুর পরই জনপ্রিয়তা বাড়ে এই সিরিজের, ‘১৯৭০ সালের দিকে এই সিরিজের বই আমাকে লিখতে বলা হয়। আমি লেখা শুরু করার পরই এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। ১৫ হাজার থেকে ১৮ হাজার কপি পর্যন্ত ছাপা হতে থাকে একেকটি বই। তখন আমি রয়ালটি হিসেবে টাকা দাবি করি। দেখা গেল, একেকটি বইয়ের জন্য সাত হাজার টাকা আমার পাওনা। কিন্তু অর্ধেক টাকার বেশি আমাকে দেওয়া হয় না। আবার বলা হলো, রয়ালটি পাব মাত্র চার বছর। এটা কাজী সাহেবের নিজের তৈরি আইন। এটা আর কোথাও নেই।’
এই রয়ালটি নিয়ে হিসাবের পার্থক্য থেকেই সংকটের শুরু। তবু সেবা প্রকাশনীর সঙ্গে তার সম্পর্কটা ৪২ বছরের। সেটা ভেঙে যাওয়ার অনেক দিন পর আইনি লড়াইয়ে নামেন তিনি এক বছর আগে। ফলটা পক্ষে পাওয়ায় খুশি। কিন্তু সমঝোতার একটা রাস্তা খোলা রাখছেন। সেবা প্রকাশনী যদি পাওনা রয়ালটি বুঝিয়ে দেয় তাহলে সেখান থেকে বইগুলো প্রকাশে কোনো আপত্তি নেই তার। আর যদি না দেয়? ‘তাহলে অন্য যেকোনো প্রকাশনীকে বইগুলো দিয়ে দেব আমি,’ স্পষ্ট অবস্থান হাকিমের।
এবিএন/জনি/জসিম/জেডি
এই বিভাগের আরো সংবাদ