শামসুজ্জোহা লোটাসের কবিতা
একুশে ফেব্রুয়ারি
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:২৩ | আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:৩২
একুশে ফেব্রুয়ারি
শামসুজ্জোহা লোটাস
সেদিনও বসন্ত এসেছিলো ফাল্গুনী বাতাসে দোল খেয়ে,
সেদিনও হালকা কুয়াশায় শীত ছিলো আয়েসি সূর্যের ভোরে,
মাখোঁ মাখোঁ ওম লেগেছিলো বিছানায়, কম্বলে, চাঁদরে।
বসন্তের অপেক্ষায় দিনগোনা সুরেলা কোকিল সুরে সুরে,
সুরের লহর সাজাতে ব্যস্ত ছিল বাসন্তীর অলস প্রহরে।
কচি ধানের আলে আঁচল পেড়ে ভাত কোলে অপলোকে,
চাষির পানে কৃষকপত্নী চেয়ে ছিলো আপন খেয়ালে। সেদিনও চারদিক শুভ্র শুদ্ধতায় ভরে ছিলো শজনের ডালে ডালে।
ঝকঝকে রোদ ঠিকরে পড়েছিল স্বর্ণলতার উঠানে।
সেদিন তিতকুড় ভাট বাগান ভরে ছিলো লেবু ফুলের মিষ্টি সুবাসে।
কৃষ্ণচুঁড়ার মাথায় ছিলো রাঙা প্রভাতের আভাস।
দক্ষিণা প্রেমে জেগে ছিলো নিম বাবলা বাহারি ফুলের যৌবনের তেজ।
আম কাঁঠালের মুকুলে মুচিতে লেগে ছিলো মন মাতানো মৌঁ মৌঁ গুঞ্জন। সেদিনও প্রেমিক প্রেমিকার ছিলো একই রকম জেদ।
সেদিনও বসন্ত বাহারে ছিলো মিষ্টি পোড়া রোদ।
ছিলো রাগ অনুরাগ, মান-অভিমান, বিষন্ন-উচ্ছ্বলতা পুরণে অপুরনের খেদ।
সেদিনও ভরপুর ছিলো মায়ের শাসন, ভাইয়ের আদর
বোনের আদিক্ষেতা আর বাবার প্রশ্রয়।
ছিলো নিষিদ্ধ ভালোবাসার অপ্রকাশিত উপাখ্যান।
সেদিনও মেঠো বাংলার পথে প্রান্তরে আগুন ছিলো
ইঁদুর পায়ে বিছানো রক্তফোঁটা পলাশ ফুলে। অথচ কি আশ্চর্য! সেদিন পলাশ ফোঁটেনি ঢাকা মেডিকেলের সামনে পাপড়া গাছে !
অথচ শহুরে পথ জ্বলজ্বলে ছিলো গাঢ় লাল রঙে
রাজ পথ ভিজেছিলো পাকি বুলেটের আঘাতে
আসাদ রফিক সালামের ভাষা প্রসবী রক্তে। সেদিন ছিলো ফেব্রুয়ারির একুশে
আজকের মতোই বসন্ত দিনে। সেদিন বাংলা মায়ের কোল ভিজেছিলো রক্তের কালিতে
দামালের বাঁধ ভেঙেছিলো আজকের শহীদ চত্বরে।
আজও রাজপথে জনস্রোতের ঢল নামে ফেব্রুয়ারি এলে,
শ্রদ্ধায় মোড়া শোকের মিছিলে ঘুম পাখিদের একুশের ভোরে।
পার্থক্য শুধু সময়ের ব্যবধানে। কালের গহ্বরে সময় হারিয়ে গেলেও অনূভুতিতে চির ভাস্বর হয়ে
বাঙালির মুখে মনে কথায় কবিতায় গানে রক্তের দাগ লেগে থাকবে।
তাই বছর ঘুরে ফেব্রুয়ারি এলে
পাতা ঝরে পড়ে বিষন্ন বসন্তে। কোনো মানুষ কি কারো মুখের বুলি কেড়ে নিতে পারে ?
সেটাই কেউ চাইতে পারে কতটা হিংসা পরায়নে আহাম্মুক হলে!
ওরা চিনতে পারেনি দুঃসাহসী বাংলার মাকে।
দেশের তরে কত সন্তান বলিদান দিতে পারে!
ওরা ভাবতে পারেনি কতটা গোয়াড় বাংলার রাখাল,
মা কে বাঁচাতে হাসতে হাসতে দিতে পারে আত্মদান।
ওরা জানতো, সম্মুখে রাইফেল গোলা পশ্চাতে কামান,
মাকে বাচাঁতে আগুনে ঝাপ দিলো, বুকে নিয়ে খোদার প্রত্যয়।
ওদের আত্মত্যাগে সেদিন প্রকম্পিত ছিলো বাংলার আকাশ,
বারুদের ধোঁয়া আর তাজা লাশের গন্ধে ভারি ছিলো বাংলার বাতাস।
আজও ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখে গন্ধ ভাসে বাংলার বাতাসে,
সে গন্ধ, শ্রদ্ধাবনত জাতির তাজা ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদনের। সেদিনের সূর্য উঠেছিলো মহাকালের তরে,
আজকের সূর্য তাই উদিত হয় সেদিনের প্রণামে।
সেদিনও হালকা কুয়াশায় শীত ছিলো আয়েসি সূর্যের ভোরে,
মাখোঁ মাখোঁ ওম লেগেছিলো বিছানায়, কম্বলে, চাঁদরে।
বসন্তের অপেক্ষায় দিনগোনা সুরেলা কোকিল সুরে সুরে,
সুরের লহর সাজাতে ব্যস্ত ছিল বাসন্তীর অলস প্রহরে।
কচি ধানের আলে আঁচল পেড়ে ভাত কোলে অপলোকে,
চাষির পানে কৃষকপত্নী চেয়ে ছিলো আপন খেয়ালে। সেদিনও চারদিক শুভ্র শুদ্ধতায় ভরে ছিলো শজনের ডালে ডালে।
ঝকঝকে রোদ ঠিকরে পড়েছিল স্বর্ণলতার উঠানে।
সেদিন তিতকুড় ভাট বাগান ভরে ছিলো লেবু ফুলের মিষ্টি সুবাসে।
কৃষ্ণচুঁড়ার মাথায় ছিলো রাঙা প্রভাতের আভাস।
দক্ষিণা প্রেমে জেগে ছিলো নিম বাবলা বাহারি ফুলের যৌবনের তেজ।
আম কাঁঠালের মুকুলে মুচিতে লেগে ছিলো মন মাতানো মৌঁ মৌঁ গুঞ্জন। সেদিনও প্রেমিক প্রেমিকার ছিলো একই রকম জেদ।
সেদিনও বসন্ত বাহারে ছিলো মিষ্টি পোড়া রোদ।
ছিলো রাগ অনুরাগ, মান-অভিমান, বিষন্ন-উচ্ছ্বলতা পুরণে অপুরনের খেদ।
সেদিনও ভরপুর ছিলো মায়ের শাসন, ভাইয়ের আদর
বোনের আদিক্ষেতা আর বাবার প্রশ্রয়।
ছিলো নিষিদ্ধ ভালোবাসার অপ্রকাশিত উপাখ্যান।
সেদিনও মেঠো বাংলার পথে প্রান্তরে আগুন ছিলো
ইঁদুর পায়ে বিছানো রক্তফোঁটা পলাশ ফুলে। অথচ কি আশ্চর্য! সেদিন পলাশ ফোঁটেনি ঢাকা মেডিকেলের সামনে পাপড়া গাছে !
অথচ শহুরে পথ জ্বলজ্বলে ছিলো গাঢ় লাল রঙে
রাজ পথ ভিজেছিলো পাকি বুলেটের আঘাতে
আসাদ রফিক সালামের ভাষা প্রসবী রক্তে। সেদিন ছিলো ফেব্রুয়ারির একুশে
আজকের মতোই বসন্ত দিনে। সেদিন বাংলা মায়ের কোল ভিজেছিলো রক্তের কালিতে
দামালের বাঁধ ভেঙেছিলো আজকের শহীদ চত্বরে।
আজও রাজপথে জনস্রোতের ঢল নামে ফেব্রুয়ারি এলে,
শ্রদ্ধায় মোড়া শোকের মিছিলে ঘুম পাখিদের একুশের ভোরে।
পার্থক্য শুধু সময়ের ব্যবধানে। কালের গহ্বরে সময় হারিয়ে গেলেও অনূভুতিতে চির ভাস্বর হয়ে
বাঙালির মুখে মনে কথায় কবিতায় গানে রক্তের দাগ লেগে থাকবে।
তাই বছর ঘুরে ফেব্রুয়ারি এলে
পাতা ঝরে পড়ে বিষন্ন বসন্তে। কোনো মানুষ কি কারো মুখের বুলি কেড়ে নিতে পারে ?
সেটাই কেউ চাইতে পারে কতটা হিংসা পরায়নে আহাম্মুক হলে!
ওরা চিনতে পারেনি দুঃসাহসী বাংলার মাকে।
দেশের তরে কত সন্তান বলিদান দিতে পারে!
ওরা ভাবতে পারেনি কতটা গোয়াড় বাংলার রাখাল,
মা কে বাঁচাতে হাসতে হাসতে দিতে পারে আত্মদান।
ওরা জানতো, সম্মুখে রাইফেল গোলা পশ্চাতে কামান,
মাকে বাচাঁতে আগুনে ঝাপ দিলো, বুকে নিয়ে খোদার প্রত্যয়।
ওদের আত্মত্যাগে সেদিন প্রকম্পিত ছিলো বাংলার আকাশ,
বারুদের ধোঁয়া আর তাজা লাশের গন্ধে ভারি ছিলো বাংলার বাতাস।
আজও ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখে গন্ধ ভাসে বাংলার বাতাসে,
সে গন্ধ, শ্রদ্ধাবনত জাতির তাজা ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদনের। সেদিনের সূর্য উঠেছিলো মহাকালের তরে,
আজকের সূর্য তাই উদিত হয় সেদিনের প্রণামে।
এই বিভাগের আরো সংবাদ